ভিজিট করুন নতুন ও স্হায়ী ব্লগ www.alomoy.com, it.alomoy.com

অনলাইনে আয়ের প্রতারণা করে অবশেষে ডোল্যান্সার উধাও


সূত্র: আমার দেশ
আপনি বেকার, লেখাপড়া কম জানেন, নো টেনশন। ঘরে কম্পিউটার আর ইন্টারনেট থাকলেই হবে! আয় করতে পারবেন ডলার। ৫০টি বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলেই প্রতিদিন এক ডলার। মাস শেষে ৩০ ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় আড়াই হাজার টাকারও বেশি। অথচ বিনিয়োগ করতে হবে এককালীন মাত্র সাড়ে সাত হাজার টাকা। এ ধরনের লোভনীয় অফারের কথা বলে ডোল্যান্সার (dolancer.com) নামের ইন্টারনেটভিত্তিক এমএলএম প্রতিষ্ঠান চটকদার ফাঁদ পেতে বসেছে। আর তাদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছেন হাজার হাজার বেকার তরুণ-তরুণী। হিসাব করে দেখা গেছে, সারা দেশে প্রায় সাড়ে চার লাখ মানুষের কাছ থেকে সদস্য বানানোর কথা বলে এ প্রতিষ্ঠানটি এরই মধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। যে কোনো দিন ডোল্যান্সার অফিস গুটিয়ে উধাও হয়ে যাবে, এমন আশঙ্কাও করছেন অনেক সদস্য।
দৈনিক আমার দেশ-এর বিজ্ঞান ও কম্পিউটার পাতায় ‘ডোল্যান্সার : অনলাইনে আয়ের নামে প্রতারণা’ শীর্ষক এমন একটি লিড আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। এই প্রতিবেদনে আমরা দেখানো হয়েছিল কীভাবে অনলাইন আয়ের নামে প্রতারণা করছে একটি চক্র। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সাবধান হওয়ার পরামর্শ ছিল। প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর সেই মহল থেকে নানা হুমকি-ধমকি ও ই-মেইল আসতে থাকে। তারা যুক্তি দেয় যে, আমার দেশ বিজ্ঞাপন না পাওয়াতেই নাকি এ প্রতিবেদন ছাপিয়েছিল! 

অবশেষে আমার দেশ-এর প্রতিবেদনই সত্য হলো। সেই ডোল্যান্সার নামক প্রতারক চক্রটি লেজ গুটিয়ে নিয়েছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই ডোল্যান্সারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোকন ইউ আহমদ উধাও। তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না গ্রাহকরা। কলাবাগানের অফিসেও তাকে দেখা যায়নি। এমনকি জিগাতলার প্রধান কার্যালয়ে তিনি অফিস করেননি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন রোকন ও তার স্ত্রী সদস্যদের কাছ থেকে সংগৃহীত টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে গেছেন। সর্বশেষ সংবাদে জানা গেছে, রোকন ইউ আহমদকে না পেয়ে লোকজন তার শ্বশুরবাড়ি ঘিরে রেখেছে। 
ডোল্যান্সারের প্রতারণার শিকার হয়েছেন তিন লাখ ৫১ হাজারের বেশি সদস্য। গ্রাহকরা জানান, সদস্য ফি, মাসিক পেমেন্ট এবং লিজ ইনভেস্ট মিলিয়ে এক হাজার কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোকন ইউ আহমদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। সারা দেশের প্রতিটি জেলায় ডোল্যান্সারের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হওয়া সদস্যদের ৯০ শতাংশই বিভিন্ন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। 

প্রতারণার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে গত শুক্রবার থেকে তারা মিরপুর মধ্য পীরেরবাগে এমডির বাসা ঘেরাও করেন। ওই বাসায় তার শ্বশুর-শাশুড়ি আছেন। একই দাবিতে গত রোববার দুপুরে তারা জাতীয় সংসদ ভবনসংলগ্ন সড়ক প্রায় ১ ঘণ্টা অবরোধও করেন। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। 
প্রতারিত গ্রাহকরা সেখানে অবস্থান করছেন। 
মিরপুর থানার ওসি কাজী ওয়াজেদ আলী গতকাল আমার দেশকে জানান, প্রতারিত শত শত গ্রাহক রোকনের শ্বশুরের ভাড়া বাসার সামনের সড়কে কয়েক হাজার প্রতারিত সদস্য অবস্থান নিলে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং তারা এখনও অবস্থান করছে। তবে মিরপুর থানায় এ বিষয়ে কেউ মামলা করেনি। তবে এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় দুটি মামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। গ্রাহকরা জানান, দেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ ডোল্যান্সারের গ্রাহক। তাদের প্রত্যেকেই সাত হাজার টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক হয়েছেন। অনেকেই আবার সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ লাখ টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ভাড়া (লিজ) নিয়েছেন। সেই হিসেবে তাদের প্রায় এক হাজার বেশি টাকার মতো বিনিয়োগ রয়েছে।

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন