ভিজিট করুন নতুন ও স্হায়ী ব্লগ www.alomoy.com, it.alomoy.com

সুন্নতের অনুসরণ

বর্তমানে বিভিন্ন ইসলামী দল বা গোষ্ঠী বলে থাকেন তারা রাসুলের সুন্নতের অনসরণ করেন। কেউ আবার অন্যদের বলেন," রাসুলের সুন্নতের সাথে আপনাদের এত বৈরিতা কেন? সুন্নত মানতে অসুবিধা কোথায়?" অন্যদিকে বিপরীত পক্ষেরও দাবী তারাই রাসুলের সুন্নতের যথাযথ অনুসারী। আমার দৃঢ় বিশ্বাস সুন্নাত শব্দটির অর্থগুলোর সঠিক ব্যাবহারের অভাবে এ ভুলবোঝাবুঝি ও মতানৈক্য। আমি আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানের সংর্কীর্ণতা কাটাতে সুন্নতের অর্থ শিখে তিনটি অর্থ জেনেছি। 
১. হাদিস অর্থ্যাৎ রাসুলের (সা.) কথা, কাজ বা মৌন সম্মতি 
২. ফিকাহশাস্ত্রে সুন্নত মানে হচ্ছে যা ফরজ কিংবা ওয়াজিব নয় তবে রাসুল সা. প্রায়ই তা করেছেন। 
ফিকহের ভাষায় সুন্নত করলে সওয়াব হবে তবে না করলে গুনাহ নেই। 
৩. সুন্নাত মানে আবার আদর্শ, রীতি-নীতি, পন্থা, পথ ইত্যাদি। 
সহজেই বোঝা যায় ৩য় ধরণের সুন্নত হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ১ম ধরণের সুন্নত বা হাদিস যেহেতু ইসলামরে ২য় উৎস হাদিস তাই সেটা পালন করা নির্ভর করবে হাদিসের গ্রহণযোগ্যতার উপর। 

কোন কোন গোষ্ঠী বলেন আমরা রাসুলের (সা.) সুন্নতের অনুসরণ করি। দুঃখের বিষয় বাস্তবে তারা ফিকহশাস্ত্রে সুন্নতের যে অর্থ সেই অর্থের সুন্নতকে বোঝেন এবং শুধু এ ধরণের কাজ কঠোরভঅবে পালন করেন।। অথচ আমাদেরকে মেনে চলতে হবে রাসুলের আদর্শ, মতবাদ যা তৃতীয় ধরণের সুন্নত। আর এ কারণেই দেখা যায় ঐসব লোক পান্জাবি, টুপি আর দাঁড়ি রেখেই সুন্নতের দাবী পূরণ করে ফেলেছেন বলে মনে করেন। পাশাপাশি অবশ্য খাওয়া, হাঁটাচলা ইত্যাদি কিছু বিষয়েও ২য় ধরণের সুন্নতকে কড়াকড়ি করে মেনে চলেন। এটা খারাপ হতোনা যদি এটা করে এটাকেই যথেষ্ট মনে করে রাসুলের মৌলিক আদর্শকে অবহেলা করা না হতো। 

তাই দেখা যায় যারা পান্জাবি, টুপি পরে সুন্নত মেনে ফেলেছেন বলে মনে করেন তারা জেনে বা না জেনে (আর ইসলামকে না জানলে তো মুসলিম হবার হকই আদায় হয়না) রাসুলের (সা.) আদর্শকে (যার মধ্যে রয়েছে অসংখ্য ফরজ, ওয়াজিব) অবহেলা করেন। যেমন ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা চিন্তা করা, ইসলাম বিরোধীদের প্রশ্রয় না দেওয়া, সামষ্টিক জীবনে ইসলামকে মেনে চলা, পুরুষদের পর্দা, বিভিন্ন কার্যোদ্ধারকল্পে ঘুষ প্রদান, যেনতেনভাবে ইনকাম ইত্যাদির ব্যাপারে রাসুলকে (সা.) হুবহু মেনে চলা। 

তাই আসুন প্রথমত রাসুলের আদর্শকে নিজেদের জীবনের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বানিয়ে নিই। কতিপয় সুন্নত আমলের মধ্যে নিজেদের সীমিত না করি উপরন্ত যা ফরজ ওয়াজিব পালনে আগ্রহ তৈরি করেনা। রাসুলের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সুন্নতও আমল করতে পারলে তো আলহামদুলিল্লাহ। কেউ করতে না পারলে (যেমন টুপি) তার নিন্দা না করি। 
বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসুল সা. সুন্নত বলে ফিকহের সুন্নত বোঝাননি বরং তার আদর্শ তথা সমাগ্রিক জীবনের রূপ বুঝিয়েছেন। যদি ফিকহের সুন্নত বোঝাতেন তাহলে এটা কি করে সম্ভব তিনি ফরজ ওয়াজিবের কথা না বলে সুন্নতের কথার প্রতি জোর দিবেন? 

শেষে একটি কথা বলি কেউ আবার বলেন, "মাথা থেকে পা পর্যন্ত সুন্নত মেনে চলতে হবে" 
আমি বলতে চাই বরং বলুন, "দিনরাত চব্বিশ ঘন্টাই সুন্নত তথা রাসুলের জীবনাদর্শ মানুন, তিনি তাঁর সারা জীবনে যতকিছু করেছেন তার কোন কিছু কাটছাট না করে"

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন