ভিজিট করুন নতুন ও স্হায়ী ব্লগ www.alomoy.com, it.alomoy.com

সাইমুম সংকলন; মানবজীবনে ধর্মের প্রয়োজনীয়তা ও ইসলাম


কথোপকথক -১(ক-১): এই, জাহাজের রেলিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে কী দেখছ?
কথোপকথক -২(ক-২): ভাবছি এই সাগর আর এ তারকা খচিত নিকষ কালো আকাশের অসীমত্বের কথা। আমরা কত ক্ষুদ্র। এই সাগর ঐ অসীম আকাশ আর এই বিচিত্র পৃথিবীর মালিক - স্রষ্টা না জানি কত মহাশক্তিশালী।
ক-১: স্রষ্টাকে তুমি মহাশক্তিশালী মনে কর?

ক-২: আমার স্বীকার করা না করার সাথে এর সম্বন্ধ নেই। মহা সৃষ্টির মাঝেই যে তাঁর মহাশক্তির সাক্ষ্য নিহিত।

ক-১: কিন্তু স্রষ্টাকে মানতে গেলেই যে ধর্মকে মানতে হয়। আর ধর্মকে মানতে গেলে দেখ না কত ফ্যাসাদ।

ক-২: যেমন?

ক-১: কোন ধর্ম মানবো, ইহুদি, না খৃষ্টান, নাকি ইসলাম ধর্ম? এত সংঘর্ষ আর বৈপরিত্য কেন?

ক-২: বৈপরিত্য নেই। মুসা (যাকে ইহুদিরা তাদের ধর্মের উদ্ভাবক বলে দাবী করে) , যিশুখ্রীষ্ট (ঈসা) আর মুহাম্মদের মূল শিক্ষা একই। ব্যবহারিক ক্রিয়াকর্মের মধ্যে পার্থক্য আছে শুধু। এই পার্থক্যকে শাসনতণ্ত্রের পরিবর্তন ও সংশোধনের সাথে তুলনা করা যায়।

ক-১: কিন্তু এটা স্বীকার করে নিলে যে ইসলামকেই মানব সমাজের জন্য শেষ ও অনুসরণীয় একমাত্র জীবন বিধান বলে মেনে নিতে হয়?

ক-২: কিন্তু যা সত্য তাকে আমরা অস্বীকার করব কেমন করে?

ক-১: এটাতো গুরুতর কথা। বলতো, আজ ধর্মের কি সত্যিই কোন প্রয়োজন আছে বলে তুমি মনে কর?

ক-২: ধর্মের অর্থ জীবনপদ্ধতি। সুতরাং এ ভূমণ্ডলে মানুষের জীবন যত দিন থাকবে ধর্মের প্রয়োজনও ততদিন থাকবে।

ক-১: জীবন পদ্ধতি আমরা নিজেরাই গড়ে নিতে পারি।

ক-২: তা পারি। এ ধরণের জীবন পদ্ধতি ফেরাউন, নমরুদ গড়ে তুলেছিল। প্লেটো, রুশো ভল্টেয়ার মানুষের জন্য নতুন জীবন পদ্ধতির দিক নির্দেশ করেছিল। হেগেল, কার্ল মার্কস মানব সমাজের ঐতিহাসিক বস্তুবাদের আলোকে নতুন জীবন জীবনদর্শনের রূপরেখা এঁকে গেছে এবং সে মোতাবেক লেনিন, মাওসেতুং এর নেতৃত্বে রাশিয়া ও চীনে সর্বাত্মক বিপ্লবও সাধিত হয়েছে। গণতণ্ত্রের উপর ভিত্তিশীল এক নয়া সমাজ পদ্ধতি ( যদিও এটি প্রাচীন গ্রীসের নবতর সংস্করণ) পশ্চিমা দেশগুলোতে চালু আছে কিন্তু এগুলোর কোন একটিওকি রাষ্ট্র, সমাজ ও ব্যাক্তি জীবনে শিান্তির সন্ধান দিতে পেরেছে? শ্রেণী স্বার্থের ধ্বজা তুলে সাম্যবাদের নামে সমাজবাদী দেশগুলো কি জনতাকে দাসে পরিণত করেনি? আর পুঁজিবাদী দেশগুলোতে ব্যক্তিস্বার্থ ও ব্যাক্তি স্বাধীনতার নামে লুণ্ঠন শোষণের অবাধ সয়লাব কি বয়ে যাচ্ছেনা? অশান্ত অস্হির মানুষকে ঘুমের বড়ি খেয়ে ঘুমোতে হয় কোন কারণে?

ক-১: কিন্তু স্রষ্টার নির্দেশিত জীবন পদ্ধতি সব সমস্যার সমাধান করবে, তার নিশ্চয়তা কী?

ক-২: আচ্ছা, সাপের কোন জিনিসকে আমরা ভয় করি?

ক-১: বিষ দাঁতকে।

ক-২: আচ্ছা, সাপের বিষদাঁত যদি উপড়ে ফেলা হয়, তাহলে সে আর কোন ক্ষতি করতে পারেকি?

ক-১: না পারেনা। কিন্তু মানুষের বিষদাঁত তুমি পাবে কোথায়?

ক-২: মানুষের বিষদাঁত তার স্বেচ্ছাচারিতাও স্বার্থপরতা। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র জীবনে সকল প্রকার বিপর্যয়, অশান্তি ও অনর্থের মূল কারণ মানুষের স্বার্থপরতা ও স্বেচ্ছাচারিতা। স্বার্থপরতা অন্যায়ের বাহন আর স্বেচ্ছাচারিতা তা অমোঘ অস্ত্র।

ক-১: কিন্তু এ বিষদাঁতকে তো ভাঙ্গা যায়না।

ক-২: ভাঙ্গা যায়না, কিন্তু এর বিলুপ্তি ঘটানো সম্ভব। মানুষ যখন এক স্রষ্টার সার্বভৌম ক্ষমতার কাছে সত্যিকারভাবে মাথা নত করে, তখন তার স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বার্থপরতার কোন সুযোগই থাকেনা। সে সত্যিকারভাবে তখন স্রষ্টার দেয়া বিধানাবলীর প্রতিপালনকারী ও প্রয়োগকারী হয়ে দাঁড়ায়।


সূত্র: সাইমুম

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন