বিষয়বস্তু বুঝার সুবিধার্থে সংক্ষেপে বিষয়সূচি।
*বর্তমানে দেশ-বিদেশে ইসলামের ভাবমূর্তি*দ্বীন বিজয়ী করার আল্লাহর প্রতিশ্রুতি*দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য কি আল্লাহ আমাদের মুখাপেক্ষী(নাউজুবিল্লাহ?*দ্বীনে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত নেই কেন*বাতিলে শক্তির উৎস*কোন দলের নেতৃত্বে সমবেত হব?
বর্তমানে দেশের যে অবস্থা (অর্থ সঙ্কট, দুর্নীতি, বিদেশী অপপ্রভাব, খুনবাজি) তাতে দেশকে রক্ষঅ করতে হলে নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান ও যেকোন অপরাধের জন্য আসল ক্ষমতার মালিক আল্লাহর কাছে জবাবদিহীতাসম্পন্ন একটি একটি সৎ দলের ক্ষমতায় আসার কোন বিকল্প নেই।
বর্তমানে
দেশীয় ও আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে
ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার অপচেষ্টা
চলছে। অথচ
আল্লাহ কুরআনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন-
هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ
رَسُولَهُ بِالْهُدَىٰ وَدِينِ
الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ
كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ
الْمُشْرِكُونَ
”তিনিই
প্রেরণ করেছেন আপন রসূলকে
হেদায়েত ও সত্য দ্বীন
সহকারে, যেন এ দ্বীনকে
অপরাপর দ্বীনের* উপর জয়যুক্ত করেন,
যদিও মুশরিকরা তা অপ্রীতিকর মনে
করে।”
(সুরা
আত তাওবা :৩৩:; (প্রায়)
একই রকম> ৪৮"২৮; ৬১:৯
)
*( যেমন
একনায়তন্ত্র, পরিবারতন্ত্র, জড়বাদ বা কমিউনিজমের
মত মানবরচিত জীবনব্যাবস্থা)
কিন্তু
আল্লাহর প্রতিশ্রুতি কি মিথ্যা (নাউজুবিল্লাহ)?
তাহলে
প্রশ্ন কেন সামগ্রিক জীবনে
ইসলামের বদলে অন্যান্য জীবনব্যাবস্হা
জয়ী হয়ে আছে?
وَإِن تَتَوَلَّوْا يَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ
ثُمَّ لَا يَكُونُوا أَمْثَالَكُم
”যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে
নাও, তবে তিনি তোমাদের
পরিবর্তে অন্য জাতিকে প্রতিষ্ঠিত
করবেন, এরপর তারা* তোমাদের
মত হবে না।” (সুরা মুহাম্মাদ, ৪৭;:...৩৮)
* (এই
'তারা'রা কোথাও
পরিবারতন্ত্র, কোথাও একনায়কতন্ত্র, কোথাও
পুঁজিবাদ, কোথাও কমিউনিজম আবার
কোথাও বাকশালী রূপ ধারণ করে
বিশ্বে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে।
ভয়াবহ দুটি বিশ্বযুদ্ধ তারা
মানবজাতিকে দেখিয়ে ছেড়েছে, আরো
দেখানোর চক্রান্ত করছে।)
এখন দ্বীন কি নিজে
নিজেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবে? মুসলিমদের
বিরুদ্ধে আরোপিত কুৎসাগুলো এমনি
এমনি মিটে যাবে?
(আল্লাহ
কোন জাতির অবস্থা পরিবর্তন
করেননা যতক্ষননা তারা নিজেরা প্রচেষ্টা
চালায়- আল কুরআন)
আল্লাহ
কি দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য
আমাদের মুখাপেক্ষী (নাউজুবিল্লাহ) ?
يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَنتُمُ الْفُقَرَاءُ
إِلَى اللَّهِ ۖ وَاللَّهُ
هُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيدُ
”হে মানুষ, তোমরা আল্লাহর
গলগ্রহ। আর
আল্লাহ; তিনি অভাবমুক্ত, প্রশংসিত “ (সুরা
ফাতির, ৩৪:১৪)
আসলে আল্লাহ দ্বীন প্রতিষ্ঠার
দায়িত্ব দিয়ে আমাদেরকে ইহ
ও পরকালীন মুক্তির সুযোগ দান করেছেন। তা
না হলে তিনি চাইলেই
বাতিল কে খতম করে
দিয়ে ইসলাম কায়েম করে
দিতে পারেন। কিন্তু
তখন তো আর পরীক্ষাটাই
থাকলোনা যে কে এ
প্রচেষ্টা চালাল আর কে
চালালনা, কে এর অন্ধ-বিরোধীতা করল আর কে
সত্যের খোঁজ পেয়ে কবুল
করল।
ইসলাম
যদি জয়ী নাও হয়
আল্লাহর কোন ক্ষতি নেই।
কিন্তু জয়ী না
হওয়ার কারণ যদি আমাদের
'প্রচেষ্টাই না চালানো' হয়
তবে আমাদের বাঁচার উপায়
নেই।
কুরআনের
প্রতিটি অক্ষর তেলাওয়াতের জন্য
সওয়াব পাওয়া যাবে।
কিন্তু এভাবে করে স্ওয়াব
জমা করার জন্যই কি
এর নাযিল হওয়া? যদি
তাই হত তাহলে কি
করে বলা যাবে ঠিক
কতসংখ্যক 'সওয়াব' জমা করলে
জান্নাতের টিকিট পাওয়া যাবে। আসলে
এটা হচ্ছে , আমার মতে মানুষকে কুরআন
পাঠে ধরে রাখার খোদায়ী
টেকনিক যা পড়ার মাধ্যমে
আমরা জানব
الر ۚ كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ
إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنَ
الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِ
رَبِّهِمْ إِلَىٰ صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ
”আলিফ-লাম-রা; এটি
একটি গ্রন্থ, যা আমি আপনার
প্রতি নাযিল করেছি-যাতে
আপনি মানুষকে <i>"অন্ধকার থেকে আলোর দিকে
বের করে আনে</i>ন"-পরাক্রান্ত, প্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে
তাঁরই পথের দিকে “
(সুরা ইব্রাহীম, ১৪:১)
মানবজাতিকে
এসব মানবরচিত 'অপতন্ত্র'সমূহ থেকে মুক্ত
করে ইসলামী জীবনব্যাবস্থা প্রতিষ্ঠার
জন্য সকল ইসলামপন্থী ভাইদের
একযোগে কাজ করা প্রয়োজন। আলাদা
থেকে থেকে চেষ্টা করে
গলে সাফল্যের সম্ভাবনা খুবই কম।
যেমন
একটি ইট পড়ে থাকলে
কোন কাজে লাগেনা।
কিন্তু অনেকগুলো ইট হলে সুন্দর
ভবন তৈরি করা যায়। একা
একটি ইট কোন বাড়ী
বানতে পারবেনা।
তেমনি
অনেকগুলো ইসলামী সংগঠন পারস্পরিকভাবে
মিলিত না হয়ে যদি
'একাই একশ" ও অন্যদের 'থোড়াই
কেয়ার করি' ধরণের প্রচেষ্টা চালায় তাহলে সাফল্যের
সম্ভাবনা কি ক্ষীণ হয়ে
যায়না?
কোন দলের ছত্রছায়ায় জড় হওয়া যায়?
আমি নিছক পূর্বপছন্দের কারণেই জামায়াত-শিবিরের নামোল্লেখ করব তা নয় যৌক্তিক কারণেই এদিকে অবস্থান নেব।
*তাদের নিম্ন থেকে নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত রয়েছে নিয়মানুবর্তিতা ও আনুগত্যের দৃষ্টান্ত যা শত্রুরা স্বীকার ও শ্রদ্ধা করে।
*তাদের ব্যক্তিগত রিপোর্ট রাখবার পদ্ধতির দ্বারা একজন ইসলামপন্থী সত্যিকারের মুসলিম হিসেবে গড়ে ওঠার তাগিদের পাশাপাশি বাস্তব প্রশিক্ষণ পেয়ে যায়। প্রতিদিন কুরঅঅন, হাদীস, ইসলামী বই অধ্যয়ন, নামাজ, দাওয়াত, পত্রপত্রিকা পাঠ ও আত্মসমালোচনা ইত্যাতি একজন মুসলিমকে দুনিয়ায় মুসলিম হিসেবে দায়িত্ব পালনে যোগ্য করে গড়ে তুলতে অনন্য।
*বাংলাদেশে ইসলাম চর্চার ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকা অগ্রগণ্য ও প্রশংসনীয়। ইসলমী বই-পুস্তক, সংষ্কৃতি ও প্রতিযোগীতা (যেমন সীরাত প্রতিযোগীতা) এগুলো প্রয়োজনীয়।
*সামগ্রিক অন্যান্য ক্ষেত্রেও যেমন ব্যাংকিং, চিকিৎসা, শিক্ষা মিডিয়ায় তাদের সরব ও ইসলামিক উপস্থিতি।
এখন অনেকে জামায়াতের বিরুদ্ধে
অভিযোগ দায়ের শুরু করবেন। মনে
রাখতে কোন ব্যক্তি বা
দলবিশেষই ভুলের উর্ধ্বে নয়। আপনি
যে দল করেন সেটা
কি কখনো ভুল করেনা?
যদি বলেন 'হ্যাঁ করেনা'
তাহলে আপনার সাথে এ
আলোচনা এখানে নয়।
কারণ এ গুণাবলীটা একমাত্র
আল্লাহর জন্যই শোভা পায়।
এটা্ও
মনে রাখতে হবে উত্তরাধীকারী
সূত্রে পাওয়া শত্রুতায় আচ্ছন্ন
থেকে 'ভুল নয়' কে
'ভুল' বা ছোটভুলকে বড়
ভুলের পাল্লায় ওজন করবেননা।
এভাবে বিরোধীতা করতে গিয়ে কোন
কোন মুসলিম(! ) ভাইকে দেখা যাচ্ছে
বানোয়াট কাহিনীও বানিয়ে নিচ্ছেন।
তাহলে কি বলা যায়
যেনতেনভাবে ইসলামী দলটির ভাবমূর্তি
ক্ষুন্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য?
এ ধরণের অনেকের মুখ দিয়ে
বাতিল ব্যাবস্থার বিরুদ্ধে কোন বিবৃতি বের
হয়না। তবে
কি তারা বাতিলের পোষ্য?
নাকি বাতিলকে ভয় করেন? নাকি
বাতিলের জীবনব্যাবস্থায় সন্তুষ্ট? (তাহলে তো তারা
আল্লাহর রুবুবিয়াতের সাথে শিরক করছেন)
মিডিয়া
ও বিভিন্ন বুদ্ধিজীবি শ্রেণীর কল্যাণে ইসলামী
দলটি সম্পর্কে অনেকই আচ্ছন্ন হয়ে
আছেন।আপনিও
কি আচ্ছন্নই হয়ে থাকবেন নাকি প্রেক্ষাপট সহ মূল সত্য
জানার চেষ্টা করবেন?
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِن جَاءَكُمْ
فَاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنُوا أَن تُصِيبُوا قَوْمًا
بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوا عَلَىٰ مَا فَعَلْتُمْ
نَادِمِينَ
মুমিনগণ!
যদি কোন পাপাচারী ব্যক্তি
তোমাদের কাছে কোন সংবাদ
আনয়ন করে, তবে তোমরা
পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে
অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোন সম্প্রদায়ের
ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং
পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না
হও। (সুরা
হুজুরাত, ৪৯:৬)
বাতিলের মূল শক্তি : আমি জোর দিয়ে বলতে চাই বর্তমানে বাতিল ব্যাবস্থা টিকে থাকার মূল শক্তি ও প্রেরণা হচ্ছে আমাদের অনৈক্য। তাই তারা বলে ইসলঅমকে আদর্শের লড়াইয়ে হারানো যাবেনা, হারাতে হলে তাদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বুনে দিতে হবে। আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ সেই বীজ গজিয়ে উঠেছে।
নিছক নীতিকথায় কখনো বাতিল হটে যাবেনা। অনৈতিক শক্তি নীতিকথার পরোয়া তো করেই না বরং নৈতিকতা ঠেকাতে অনৈতিক শক্তি ও দাপট কাজে লাগায়। (যেমন খুনী, অর্থো-আত্মসাৎকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা ও আইনেরে আশ্রয় দান)
যাদের সাথে বাতিলে বিরোধ নেই তারা ভাবলে ভুল হবে যে তারা এমন গোপনে ও সুকৌশলে দাওয়াত চ্লাচ্ছেন যে বাতিণ টেরই পাচ্ছেনা। আসলে কাজতো তাদের নাকের ডগায়ই হচ্ছে। কিন্তু তারা এক তাদের উৎখাতের জন্য বিপজ্ঝনক মনে করেনা। অথচ প্রত্যেক নবী আ. দের সময়ে সমকালীস শাসকরা নবীদের (আ.) দাওয়াত শুনেই গর্জে ওঠত।
আসলে বাতিল সময় মত তাদেরও দেখে নিবে। সেই আখচাষীর গল্পের মত যে ক্ষেতে একাধিক চোর দেখে একেজনের সাথে একেক পর্যায়ে নমনীয়তা দেখিয়ে শেষপর্যন্ত সবাইকে শাস্তি দিয়েছে।
একটি দল যখন ইসলাম
প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দাঁড়াল তখন তার
প্রতি আচরণ যেন এমন
না হয় যেমন আচরণ
মদীনায় রাসুল সা. এর
আগমনের আগে থেকেই 'একত্ববাদের
বাহক' বলে পূর্ব থেকেই
পরিচিত ইহুদী সম্প্রদায় ছোট্ট
ইসলামী দলটির সাথে করেছিল।( একথা
সকলকে উদ্দেশ্য করে বলছিনা, তবে
কেউ কেউ অন্ধ-বিরোধীতা
বরতে গিয়ে এমন কাজই
করে ফেলছেন)
[বি:দ্র: আমার একেক কথা একেক দলের প্রকি ইঙ্গিত করে বলা, তাই আপনি যে দলে আছেন তাতে আমার ইঙ্গিত করা কথাটা বর্তমান না থাকলে নিশ্চিত থাকুন কথাটা আপনাদের বলা হয়নি]
0 টি মন্তব্য:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন