ভিজিট করুন নতুন ও স্হায়ী ব্লগ www.alomoy.com, it.alomoy.com

তবে কি আমরা ফরয সালাত আল্লাহর জন্য আর সুন্নাত সালাত রাসুল সা. এর জন্য পড়ি?-তোফাজ্জলের অদ্ভূদ ব্যাখ্যা

বিতর্কিত ওয়ায়েজ তোফাজ্জল হোসেন এর ওয়াজ শুনেন এমন এক বন্ধুর কাছে আজকে তার আরেক অদ্ভূদ কাহিনী শুনলাম। এক পীর নাকি তার মুরীদকে বলল ,'আজকে এশার নামায পড়োনা, পড়লে কিন্তু আমি জেনে ফেলব'। মুরীদ দোটানায় পড়ল। নামাযতো ফরয, আবার পীরের কথা! পরে সে বাসায় গিয়ে শুধু ফরযটুকু পড়ল। ফলে রাতে স্বপ্ন দেখল রাসুল সা. তাঁকে এসে বললেন, 'তুমি আমার সুন্নাত ছেড়ে দিলে?' পরদিন পীরও তাকে বলল ,'তুমি আমার কথা না শুনে ঠিকই সালাত পড়লে!! আর রাসুল সা. তোমাকে এই এই বললেন, তুমি যদি সুন্নাত না ছেড়ে ফরয ছাড়তে তবে স্বয়ং আল্লাহ স্বপ্নে দেখা দিতেন।'

সে সালাত ছাড়তে বলার কারণ জিজ্ঞেস করলে পীর বলল সেটা তুমি এখন বুঝবেনা, মারেফাতে পৌঁছলে বুঝবে!!!!
উনি বললেন মুরীদ যদি সুন্নাত না ছেড়ে ফরয ছাড়তো তবে স্বয়ং আল্লাহ স্বপ্নে দেখা দিতেন। তারমানে আমরা ফরয পড়ি আল্লাহকে খুশী করতে আর সুন্নাত পড়ি রাসুল সা. কে খুশী করতে??
কিন্তু কুরআন কি বলে??
(সুরা আন'আম ৬:১৬২)
قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّـهِ رَ‌بِّ الْعَالَمِينَ
আপনি বলুনঃ নিশ্চয়ই, আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্ব-প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে।
(সুরা কাউছার, ১০৮:২)
فَصَلِّ لِرَ‌بِّكَ وَانْحَرْ‌
অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কোরবানী করুন।

সুরা গাশিয়া (৮৮:২১-২২)
فَذَكِّرْ‌ إِنَّمَا أَنتَ مُذَكِّرٌ‌ ﴿٢١﴾ لَّسْتَ عَلَيْهِم بِمُصَيْطِرٍ‌
বেশ (হে নবী!) তাহলে তুমি উপদেশ দিয়ে যেতে থাকো। তুমি তো শুধু মাত্র একজন উপদেশক,
তাদের উপর তত্বাবধায়ক নন।

(সুরা আন'আম ৬:৭৯)
إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ‌ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْ‌ضَ حَنِيفًا ۖ وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِ‌كِينَ
আমি তো একনিষ্ঠভাবে নিজের মুখ সেই সত্তার দিকে ফিরিয়ে নিয়েছি যিনি যমীন ও আসমান সৃষ্টি করেছেন এবং আমি কখনো মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।”

আমরা ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত সালাত সাওম বা যেকোন ইবাদত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যেই করি। রাসুল সা. তো আল্লাহর পক্ষ থেকে একজন বাহক মাত্র। আর তাঁকে আমরা মানি আমাদের আল্লাহর প্রেরিত আদর্শ নেতা ও মানব হিসেব। তিনি আমাদের কাছে আল্লাহর বাণী ঠিকঠিকভাবে পৌঁছিয়েছেন, নিজে আল্লাহর বিধান শত জুলুম সহ্য করে বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে গেছেন ইত্যাদি কারণে আমরা তাঁকে পৃথিবীর সবকিছুর চাইতেও বেশি ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের সবকাজের মূল উদ্দেশ্য শুধু এক আল্লাহরই সন্তুষ্টি অর্জন।

একজন হচ্ছেন মুনিব আরেকজন তাঁর দাস। দু'জন কোন দায়িত্ব ভাগাভাগি করতে পারেননা।
(সুরা ইঊসুফ, ১২:৪০)
إِنِ الْحُكْمُ إِلَّا لِلَّـهِ
"আল্লাহ ছাড়া কারও বিধান দেবার ক্ষমতা নেই।"

এছাড়া আলোচ্য ঘটনায় পীর মুরীদের সালাতের খবর কীভাবে পেল? সেকি গায়েব জানে??
বলুন, আল্লাহ ব্যতীত নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে কেউ গায়বের খবর জানে না এবং তারা জানে না যে, তারা কখন পুনরুজ্জীবিত হবে। (সুরা নামল, ২৭:৬৫)

আর এটা কেমন পীরগীরি আর মুরীদি যেখানে ইসলামের প্রধান রুকন ছাড়ার আদেশ দেওয়া হয়।
অথচ কুরআন বলছে, "হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে কতৃত্বশীলদের তারপর যদি তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে প্রবৃত্ত হয়ে পড়, তাহলে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি প্রত্যর্পণ কর-যদি তোমরা আল্লাহ ও কেয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাসী হয়ে থাক। আর এটাই কল্যাণকর এবং পরিণতির দিক দিয়ে উত্তম। "
কতৃত্বশীলদের আনুগত্য ততক্ষণ যতক্ষণ তারা আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ না করে। সীমা ছাড়াতে গেলেই আয়াতমতে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দিকে ফিরে আসতে হবে।

এই তোফাজ্জল সাহেব বিভিন্ন উদ্ভদ কিসসা কাহিনীকে বজনপ্রিয় হবার জন্যে আকর্ষণীয় করে তুলে ধরছে। আগেও ব্লগে তাকে নিয়ে আব্দুল্লাহ শাহেদ ভাইসহ বিখ্যাত ইসলামী ব্লগারগণ আলোচনা করে তাকে বর্জনের পরামর্শ দিয়েছেন।
সার্চ দিয়ে পেলাম ভাই ইসমাইল একেবি এর লেখা
বক্তা তোফাজ্জেলের আজগুবি ওয়াজ বিশ্লেষণ

0 টি মন্তব্য:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন